কেন ঘানির তৈরি তেল ব্যবহার শ্রেয়

effortbd.com বাংলাদেশের জনপ্রিয় ই -কমার্স ওয়েবসাইট। ঘানির তৈরি তেল - Bangladeshi Ecommerce | Effortbd

পোস্ট শেয়ার করুন

সরিষা তেল

সর্ষে ইলিশ হতে শুরু করে,পাতুরি, ছোট মাছের চরচরি ভিন্ন ভিন্ন রকমের ভর্তা ও আচার আমাদের ঐতিহ্যের সাথে আজও গেঁথে আছে।তাছাড়াও, বিভিন্ন বিখ্যাত প্রবাদে “সর্ষে-তেল” এর ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন, চোখে সর্ষে ফুল দেখা(অবাস্তব পরিকল্পনা অর্থে ব্যবহৃত হয়),নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমাও(গভীর ঘুম যাওয়া অর্থে ব্যবহৃত হয়)।এক কথায়, সরিষ ও বাংলা একই মুদ্রার দু’পিঠ।

কেন ঘানির তৈরি তেল ব্যবহার শ্রেয়

সরিষা তেল প্রাস্তরিতকরণ

সরিষা তেল প্রাস্তরিতকরণ অন্যান্য তেল হতে অনেক আলাদা। অতীতে বাংলায় গরুর ঘানি টানিয়ে সরিষার বীজ হতে ফৌঁটায় ফৌঁটায় তেল তৈরি হতো। এটি খুবই সময় সাপেক্ষ ও পরিশ্রমের কাজ ছিল। মোটামুটি ৩ঘন্টায় ২লিটার এরও কম তেল তৈরি হতো। শিল্পবিপ্লব এর সাথে সাথে আমরা সনাতনি প্রথা হতে বের হয়ে আরও উন্নত মেশিনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকি। এতো স্বল্প শ্রমে অধিকতর তেল উৎপাদন সম্ভব।

কেউ রাখে না কুলর খবর

বর্তমানেআমাদের মধ্যে অনেকেই ঘানি জিনিসটার সাথে পরিচিত নই। এই সনাতনি প্রক্রিয়ায় পাওয়া তেল ১০০ ভাগ খাঁটি। এতে সরিষার আসল রং ফুটে উঠে। গ্রামাঞ্চলে কাঠের তৈরি ঘানিকে তেলের গাছ হিসেবে আক্ষায়িত করা হয়।এই পেশায় নিয়জিত ব্যক্তিবর্গকে কলু অথবা তেলী হিসেবে বেশ খ্যাতি আছে।গত দুইতিন দশক আগেও কলু সম্প্রদায়ের দেখা মিললেও আজ তার সংখ্যা খুবই নগণ্য।সঠিক ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে বাধ্য হয় এই পেশা ত্যাগ করছেন।

ঘানি ভাঙ্গা সরিষা তেলের সংস্কৃতি দুই কারণে আজ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে,

  • প্রথমত, আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে স্বল্প খরচে তেল উৎপাদন সম্ভব। এই তেলের সাথে বিভিন্ন প্রকার লোহজাতীয় দ্রব যেমন আয়রন, নিকেল ইত্যাদি মিশ্রিত থাকে। এতে উভয় তেলের বিশুদ্ধতা ও রং ক্ষুন্ন হয়। সুলভ মূল্যে হওয়ায় এটা ভোক্তার কাছে আজ বেশ জনপ্রিয়।
  • দ্বিতীয়ত, ব্যাণিজিক বাজারে সরিষা ও গো-খাদ্যের চরম দামের উদ্ধোগতি হওয়ায় অনেকেই এই ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখিণ হচ্ছে।

তবুও গ্রাম বাংলার হাতে গণনা কিছু কুলো দেখা যায়। যারা শত বাধার সম্মুখীন হয়েও হার মানেন নি।উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ঘানি দিয়ে পরিবারের ভরনপোষণ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিরলস পরিশ্রমে ফোঁটায় ফোঁটায় তেলের দাম একটু বেশি। আজও ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও দূরদূরান্ত এলাকা হতে মানুষ এই ঘানি ভাঙ্গা তেল কিনতে আসেন।

কেন ঘানির তৈরি তেল ব্যবহার শ্রেয়

মেশিনে তৈরি সর্ষে তেলের স্যাচুরেটেড ফ্যাট পওয়া যায়।এটি লিভার ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। তাই চিকিৎসকদের মতে ন্যাচারাল ভাবে উৎপাদিত সর্ষে তেল খাওয়া সবচেয়ে ভালো। এতে শরীরে গুড ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ে। তারসাথে দেহের সিএইচডি’র ঝুঁকি কমায়।

সরিষা তেল আসল নাকি নকল কেমনে বুঝবো??

  • সরিষা তেলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি পানির সংস্পর্শে আশার আগ পর্যন্ত গন্ধ ছড়ায় না। তাই যে তেল ঝাঁকালে গন্ধ পাওয়া যায় তা আসল নয়।
  • সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো তেলটিকে আধাঘন্টা ধরে ফ্রিজে রাখা। যদি জমে যায় তাহলো আসল না।
  • খাঁটি সরিষা তেল কখনো সুতির কাপড়ে দাগ ফেলে না।cookingoil

সরিষা তেল ব্যবহারে সুবিধা

  • সরিষা তেল ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • সরিষা তেলে রয়েছে মনোস্যাচুয়েট ও পলিআবস্যাচুয়েট নামক ফ্যাটি এসিড।
  • এতে খাদ্যকে দ্রুত মল্ডে রূপান্তর করে।
  • এতে হজমশক্তি বৃদ্ধি ও রেচনতন্ত্রের জটিলতা দূর হয়। ফ্যাটিএডিস রক্তের চর্বির উপস্থিতি হ্রাস করে।

1. সরিষা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো:

  • সরিষা তেল হলো সরিষ বীজ হতে উৎপন্ন হলুদাভ রঙএর তীব্র সুগন্ধিযুক্ত তেল।
  • এতে ওমেগা তিন ও ফ্যাটি এসিড ছয় রয়েছে। যা রক্তনালীর মধ্যে কোলেস্টেরল হ্রাসকারী পদার্থ হিসেবে কাজ করে।
  • অপরদিকে পরিশোধিত তেল হলো বিষাক্ত গন্ধযুক্ত তেলতেলে পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি। যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পরিশোধের মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণরূপে ক্রেতার নিকট বিক্রি করা হয়
  • এতেথাকে নিকেল যা মানুষের ত্বক, শ্বাসতন্ত্র ও লিভারের উপর বিষক্রিয়া করে থাকে।
  • সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH) প্রক্রিয়াজাতকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে আমাদের পাচনতন্ত্রের প্রভাব ফেলে।

2. সরিষা চুলের গোড়া শক্ত করে:

  • সরিষার তেল শরীরে কালো দাগ ও পিপমেন্টশনে নিরসক হিসেবে কাজ করে।
  • এতে রয়েছে ভিটামিন এ,বি কমপ্লেক্স এবং ই।
  • ভিটামিন এ ও বি কমপ্লেক্স ত্বকের অবানচিত দাগ দ্রুত নিরসন করা যায়।
  • বিশেষজ্ঞ মতে, সরিষ তেল অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।
  • এটি মাথা খুশকি ও উকুন হ্রাস করে।
  • হেয়ার মাক্স গিসপবে ব্যবহারে চুলের আদ্রতা বৃদ্ধি পায়।
  • ন্যাচারাল ফ্যাট প্রত্যেকটি চুলের স্ট্যান্ডাকে প্রতিরোধক আবরণ প্রদান করেন।
  • এটি চুলে চকচকে ও মসৃণতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

3. সরিষা ত্বকের জন্য উপকারী:

  • এটা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • এটি সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি( UV). প্রতিফলক হিসেবে কাজ করে।
  • প্রতিদিন বাইরে বের হওয়ার আগে ২ হতে ৩ ফৌঁটা সরিষার তেল মুখে ব্যবহার করা যায়।

4. সরিষা তেল চর্মরোগ প্রতিশেধক:

  • সরিষা তেলে রয়েছে গ্লুকোসিনোলেট, এক প্রকার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। যা শরীরের বাধ্যক রোধক হিসেবে কাজ করে।
  • এটি ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি পরিশেধক রূপে কাজ করেন।
  • বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, প্রতিদিন ১৫ মিনিট ধরে রাতে ঘুমানোর আগে ম্যাসাজ করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

5. সরিষা তেল ম্যাসাজ ওয়েল হিসেবে ব্যবহার:

  • সরিষা গাছের বীজ হতে তেল উৎপন্ন হয়।
  • এই তীব্র গন্ধযুক্ত তেল ভারতবর্ষে বেশ জনপ্রিয়।
  • গবেষণায় দেখা গিয়েছে,সরিষা ম্যাসাজ তেল হিসেবে উত্তম তরল পদার্থ।
  • কারণ এতে ক্যাপসাসিন নামক অনুরূপ যোগের প্রমাণ পাওয়া যায়।
  • এটি মূলত ব্যথা ও প্রদাহ উপশমকারী পদার্থ।
  • তাই ত্বকে সরিষা তেল মাখলে হালকা উষ্ণতা অনুভূত হয়।

6. সরিষা তেল রপ্তানিমুখর পরিবেশ সৃষ্টি:

বর্তমানে মায়ানমার এর পাম তেল, ইতালির জলপাই তেল, আমিরিকার সোয়াতেলের মতই সরিষা তেলের বাজারে বেশ চাহিদা দেখা যাচ্ছে৷ এটি বর্তমানে সারা এশিয়াতে ব্যবহার ছড়িয়ে পরেছে। সরিষা একটি বহুমুখি ব্যবহার যোগ্য পণ্য। এটি এখন শুধু মাত্র খাদ্যের স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধিকারক বস্তু হিসেবে পরিচিত নয়।তার সাথে ত্বক চুল জয়েন্ট, পেশি ও হৃদপিন্ডের নানা রোগ নিরামক হিসেবে কাজ কাজ করছে। বৈদেশিক বাজারে এর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আয় সম্ভব। এর জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা ব্যবস্থা ও যোগান।

7. সরিষা তেল ব্যবহারে অসুবিধা:

প্রতিটি বস্তু কিছু ভালো মন্দ দিক রয়েছে। সরিষার তেলও এর ব্যতিক্রম নয়।স্বাস্থ্যকর রান্না হিসেবে সরিষার গ্রহণযোগ্য হলেও, অতি মাত্রাই ব্যবহার শরীরের নানা রকম ক্ষতি করতে পারে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য প্রশাসন বিভাগের প্রকাশকৃত খাদ্য তালিকায় সরিষা তেলের নাম অনুমোদিত হয় নি। এর মূল কারণ হিসেবে ইউমেন রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, সরিষাতেলে ৪০ শতাংশেরও বেশি ইউরিক এসিডের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। সরিষা তেল বেশি গ্রহণে ডায়রিয়া হতে শুরু করে কিডনি ফেল এর মতন কঠিন রোগের শিকার হতে পারে।

সরিষা তেল একটি খুবই জনপ্রিয় রন্ধন উপরণ। এর তীব্র সুগন্ধি আজও বাংলার প্রাণ ভরিয়ে তোলে।আদির কাল হতে কবিরাজি ঔষধী হিসেবে এর ব্যবহার হয়ে এসেছে। কিন্তু দ্রুত আধুনিকতার সাথে সাথে আমরা আমাদের মূল হারিয়ে ফেলছি। বিভিন্ন ফাস্ট ফুড এর নাম করে বিভিন্ন ভাজা পোড়া খাবার বাঁচাদের শারীরিকভাবে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের উচিত সন্তানদের বাঙালী রন্ধন শিল্প ও উপকারিতা সাথে পরিচিত করানো।

স্থানীয় বাজার থেকে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম: বাংলাদেশের ইকমার্সের প্রস্তুতি

স্থানীয় বাজার থেকে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম: বাংলাদেশের ইকমার্সের প্রস্তুতি প্রাচীন থেকেই বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময়ী দেশ। বাংলাদেশ একটি বৃহত্তর বাজার, যেখানে বিশ্বের