Description
ঘটনার সূত্রপাত ২০০২ এর ২৭ ফেব্রুয়ারি– গুজরাটের “সবরমতি এক্সপ্রেস” নামে একটি ট্রেনে হামলায় ভারতের ৫৯ জন মারা যায়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে ২৫৪ জন। এ ঘটনায় কোন প্রমাণ ছাড়াই মুসলমানদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অথচ পরবর্তীতে ‘নতুন নানাভাতি’ তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে বেরিয়ে আসে যে, ভারতের মুসলমানদের উপর হামলা চালানোর পূর্ব – ষড়যন্ত্র হিসেবেই এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা সাজানো হয়, যা মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসীরা করেছিল। সেটাকেই ছুতো করে মাসখানেক ধরে সাম্প্রদায়িক উগ্র হিন্দুরা মুসলিমদের উপর হামলা চালায়। সে থেকেই শুরু হয় দাঙ্গা।
সংখ্যা লঘু হওয়াতে মুসলিমদের উপর হিন্দুদের নির্যাতনের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। সে নির্যাতন সকল যুগের সকল বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। মুসলিমদের ব্যাসায়িক প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। অধিকাংশ মুসলিমদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে। শত শত মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। শিশুদেরকেও তারা ছাড় দেয়নি। প্রায় লাখখানেক মুসলিম তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই নির্যাতনে RSS সহ হিন্দু উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়।
গুজরাটে মুসলিম গণহত্যার নির্মমতাঃ
বাবুভাই প্যাটেল, সকলের কাছে পরিচিত উপনাম বাবু বজরঙ্গি হিসেবে।
গুজরাটে মুসলিম হত্যাকান্ডের অন্যতম এই নরপশু এমনই এক বর্বর পিশাচ যে কিনা মায়ের পেট থেকে ৯ মাসের ফিটাসকে (ভুমিষ্ট হওয়ার আগপর্যন্ত শিশুদের ফিটাস বলে) মায়ের পেট কেটে বের করে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল !
ভাবছেন এটা কি করে সম্ভব? হ্যাঁ, এটা এই বাবুভাই প্যাটেল সম্ভব করেছে। কাউসার বানু নামের এক ৯ মাসের গর্ভবতী মহিলার পেট কেটে বাবুভাই প্যাটেল তার জন্ম না নেয়া শিশুকে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
এটা ছিল একটি অপকর্মের নমুনা মাত্র। এ ছাড়াও শত শত মুসলিম নারীদেরকে ধর্ষণ করার পর আগুনে পুরিয়ে হত্যা করা হয়েছিল ।মুসলিমদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সামনে মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তারপর তাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে।
একটি তথ্য অনুযায়ী ভারতের গুজরাট রাজ্যে ২০০২ সালে মুসলিম বিরোধী এই দাঙ্গায় অন্ততঃ ৫০০০ মুসলমান নিহত হয়েছিলেন।
গুজরাট দাঙ্গায় দাঙ্গাকারীদের না ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল। এক পুলিশকর্মীর জবানবন্দী, “মুসলিমদের বাঁচানোর জন্য আমাদের কোনো নির্দেশই ছিল না।”
২০০২ সালের দাঙ্গার সময় মুসলিম মহিলারা পুলিশের কাছে তাদের ইজ্জত রক্ষার আবেদন জানালে পুলিশ বলেছিল, “তোমাদেরকে তো শেষমেষ মেরেই ফেলবে। তার আগে ইজ্জত থাকলো কি চলে গেল তাতে কি?”
এমনকি তলোয়ার হাতে দাঙ্গাকারীরা গর্ভবতী মুসলিম নারীদের পেট ফেঁড়ে ভ্রুণ বের করে তা তরবারি’র আগায় বিদ্ধ করে নারকীয় উল্লাস প্রকাশ করেছে বলেও সে সময় গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল।
উগ্রবাদী হিন্দু সন্ত্রাসীরা ৫৬৩ টি মসজিদ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছিল। তাছাড়া ঐ দাঙ্গায় আড়াই লক্ষ মানুষকে গৃহহীন হতে হয় ।
গুজরাট হামলার প্রধান উস্কানি দাতা গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নারেন্দ্র মোদিকে ভারতীয় হাইকোর্ট মুক্তি দিয়েছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
বইঃ গুজরাট ফাইলস | এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের ময়নাতদন্ত
লেখকঃ রানা আইয়ুব
Reviews
There are no reviews yet.